স্মৃতি ।। স্বরুপা রায়



স্মৃতি
স্বরুপা রায়

সব লোকজন খাওয়াদাওয়া শেষ করে চলে গেলে আমার স্ত্রী রুমিলা এসে দাঁড়াল ওর ঘরের
বারান্দাটায়। বাইরের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে। হঠাৎ পেছন থেকে দীপ এসে ওর
কাঁধে হাত রাখে। রুমিলার সম্বিত ফিরতেই ও দীপের দিকেে তাকায়।
'কি ভাবছো?' দীপ জিজ্ঞেস করল।
'এক বছরে জীবনটা আমার কতটা বদলে গেল! সেসবই ভাবছিলাম।' রুমিলা বলে।
'এক বছর তো হয়ে গেল। এবার আমাদের ব্যাপারটা ভেবে দেখো।'
'আমাদের ব্যাপারে কী আর ভাবব?'
'বিয়ে করবে আমাকে?'
রুমিলা একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলল 'এখন স্নেহার বিয়ের বয়স। এই বয়সে এসে
আমি বিয়ে করলে, কেমন দেখাবে!'
'তাই বলে নিজের বাকি জীবনটা জলাঞ্জলি দেবে?'
'তা নয়!'
'তাহলে কি? আমরা তো আর ধুমধাম করে বিয়ে করব না। কোর্ট ম্যারেজ করব।'
'স্নেহা চায় না আমি আবার বিয়ে করি।'
'তুমি চাও?'
'একটা কাঁধ, যেখানে মাথা রেখে স্বস্তিতে বাকি জীবনটা কাটাব।'
'তাহলে অত ভাবছ কেনো?'
'তোমার বাড়ির লোক রাজী?'
'বাড়ির লোক বলতে শুধু বাবা। বাবার তো তোমাকে বরাবরই খুব পছন্দ। সেই কলেজ জীবন
থেকেই।'
'ঠিক আছে। তবে আমিও রাজী।'

পরেরদিন সকালবেলা,
স্নেহাকে ওর বাড়ির সামনে থেকেই গাড়িতে তুলে নিল অভিক। দুজনেরই গন্তব্য অফিস।
রোজই এরকম অভিক গাড়ি নিয়ে এসে স্নেহাকে অফিসে পৌঁছে নিজে অফিস যায়। ফেরার সময়
আবার ঠিক উলটো।
'আজ আমি খুব খুশি।' স্নেহা উৎফুল্ল হয়ে বলল অভিককে।
'তার কারণটা কি?' অভিক জিজ্ঞেস করল।
'এবার আমাদের বিয়ের কথাটা এগোনো যাবে। ঝামেলা মিটে গেছে!'
'ওহ আচ্ছা এই ব্যাপার! ঠিক আছে তাহলে আজই বাবা-মাকে তোমাদের বাড়িতে পাঠাই।'
'একদম পাঠিয়ে দাও। শুভ কাজে দেরী করতে নেই।'

তিন বছর পরে,
রুমিলা এখন দীপের সাথে নতুন সংসারে বেশ ব্যস্ত। দীপের নতুন ফ্ল্যাট কিভাবে
সাজাবে সেসব ভেবেই দিন কেটে যায়। আর তারসাথে কলেজ জীবনে ফেলে আসা পুরোনো প্রেম
আবার নতুন করে জেগে উঠেছে।
এইদিকে রুমিলা আর দীপের বিয়েটা মেনে নিতে পারেনি স্নেহা। রুমিলার সাথে সব
সম্পর্ক ত্যাগ করে কিছুদিন আগেই অভিককে বিয়ে করে সংসার করছে এখন।

আজ রুমিলা আর দীপের সংসারে নতুন অতিথি আসবে। রুমিলা পুত্রসন্তানের জন্ম
দিয়েছে। আর স্নেহা আর অভিকের আজই হানিমুন যাত্রা।
আর আমার মা আজ আমার ছবিটাকে রোজকার মতোই ভালো করে মুছে একটা রজনীগন্ধার মালা
পরিয়েছে। কাঁপা হাতে আমার প্রিয় সব খাবার রান্না করে আমার ছবির সামনে সাজিয়ে
রেখে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলল, 'চার বছর হয়ে গেল তুই আমাকে ছেড়ে চলে গেছিস।
এই চার বছরে কতকিছু বদলে গেছে। তোর সাথে সারাজীবন কাটানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া
তোর স্ত্রী আজ অন্যের সন্তানের মা হয়েছে। তোর নিজের সন্তান আজ বাবার
মৃত্যুদিবসটাও মনে রাখতে ইচ্ছুক না। কিন্তু আমিই পারিনা এক মুহুর্ত তোকে ভুলে
থাকতে। প্রতি মুহুর্তে মনে হয় তুই আমার কাছেই আছিস। এখুনি আমার কাছে 'মা...'
বলে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরবি। যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস বাবা।'



 

 

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...