logo corona

সাবধান, সতর্ক, সচেতন এবং সুস্থ একটি আহ্বান ।। মন্দাক্রান্তা সেন

 

সারা পৃথিবীতে ত্রাস সৃষ্টি করেছে একটি জিন মাত্র । উজাড় হচ্ছে একের পর এক দেশ । এবং তারা বেশির ভাগ প্রথম বিশ্বের । সেখানে ভারত তো কোন ছার । এই ভাইরাস কোভিড ১৯- এর সৃষ্টি চিনে । তাদের ল্যাবরটেরি থেকে লিক করে এই ভাইরাস চিনে ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু উহান অঞ্চলের বাইরে তা তেমন দাঁত ফোটাতে পারেনি । এর কারণ চিন সত্যিকারের একটি শিক্ষিত দেশ । আপনি বলবেন অ্যামেরিকা বিটেন ইতালি ফ্রান্স স্পেন কি শিক্ষিত দেশ নয় ? নিশ্চয় শিক্ষিত, কিন্তু ডিসিপ্লিন্ড নয় । চিনেও তো ফের ফিরে আসছে করোনা । তা বলে আমাদের আহ্লাদের তো কিছু নেই । প্রয়োজন সতর্কতা বাড়ানো, সক্রিয়তা বাড়ানো । আমাদের দেশে শিক্ষা তো নেইই, ডিসিপ্লিন আরও নেই । লকডাউন করে সংক্রমণ ঠেকানো এখানে এখনও অসম্ভব । জনতা কারফিউ-র মতো পদক্ষেপ, তা যতই অর্থহীন হোক, থালা বাজানো আর হাততালি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক, লোকে জনতা রাস্তায় নেমে পড়ল । তারা এমনকি রাস্তায় নেমে নাচানাচিও করল । ঠিক যেন করোনা মাঈ কি জ্যায় । আসছে বছর আবার হবে । তারপর শক্তি প্রদর্শনে দিয়া জ্বালানো । কী, না শক্তিপ্রদর্শন । বাজি পোড়ানো । এসব কি শিক্ষিত দেশের উদাহরণ !

আমাদের দেশে লকডাউন আদৌ হচ্ছে না । কমপ্লিট লকডাউন মানে কমপ্লিট লকডাউন । কে মানছে ? বাজারে গাদাগাদি ভিড়, দলে দলে নমাজ পড়া ---এগুলো কি লকডাউনের নমুনা ? কিন্তু কী করেই বা এই লকডাউন চাইব আমরা, যখন দিন আনি দিন খাই মানুষগুলোর পেটে ভাতে টান ! পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে দূর দূরাঞ্চল থেকে ঘরে ফিরতে চেয়েও ফিরতে পারছে না ! হ্যাঁ, সহানুভূতিশীল মানুষ তাদের খাবার দিচ্ছে, ঘরে ঘরে চাল আলু বিলি করা হচ্ছে । আমরা বিভিন্ন ফান্ডে (অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য) যথাসাধ্য দিচ্ছি ৷ কিন্তু এত বড় দেশে এত ভুখা পেটের খাবার জোটানাের সাধ্য কারও নেই ।

অত্যাবশ্যকীয় পেশার মানুষজন যেমন স্বাস্থ্যকর্মী পুলিশ সাফাইকর্মী দমকল গণমাধ্যম মুদি- দোকানীকে এই লকডাউনে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৷ ছাড় পেয়ে তাঁরা
কি আনন্দিত ? না কি আতঙ্কিত ? স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষা নেই, মেডিকেল কিট নেই, তাঁরা ভবিতব্যের হাতে তাঁদের ভবিষ্যতকে ছেড়ে দিয়েছেন ৷ মরলে যেন কত লক্ষ টাকার বিমা ? আর বাঁচার বেলায় ঢু-ঢু ৷ এদিকে একেক দিন একেক রকম ওষুধের আবিষ্কার । সে সব নিয়ে উত্তেজিত আলোচনা ৷ দেশে নেই কিস্যু, হতচ্ছাড়া ট্রাম্পের ভয়ে জুজু হয়ে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন চলে যাচ্ছে মার্কিন দেশে ৷ মেডিক্যাল কিট চলে যাচ্ছে সার্বিয়ায় ৷ কেন ! এদিকে আরো নিদারুণ খবর, দেশের এই চরম দুঃসময়ে মোদী কোটি কোটি টন অস্ত্র কিনছেন ইজরায়েল থেকে । এও সম্ভব !

বলছিলাম, এই দেশে কমপ্লিট লকডাউন অসম্ভব ৷ শিক্ষিত মধ্যবিত্তরাও (উচ্চবিত্তদের কথা বাহুল্য) লকডাউনে দিব্যি একটা ছুটি কাটাচ্ছেন ৷ বেশি বেশি বাজার, ভালােমন্দ রান্না, ফেসবুকে খাবারের পোস্ট ৷ এই আনন্দের গােড়া কাটতে হবে । মানুষের মনে ভয় ঢোকাতে হবে । একথা বললেই পুলিশ আমায় গ্রেপতার করবে আতঙ্ক ছড়ানাের দায়ে, কিন্তু তবু আমি বলব, মমতা দেবী এই বেলা মৃতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করুন । তাহলেই মানুষ ভয় পাবে । তাহলেই মানুষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হবে ।তখনই,  একমাত্র তখনই কমপ্লিট লকডাউন সম্ভব । 

সবাই প্রথম প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতা দেখে আশ্বস্ত না হোক, অন্তত আশাবাদী হয়েছিলেন ৷ তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম ৷ কিন্তু এর পিছনে কী যে খেলা সেটা বুঝতে দেরি হয়নি I সে কথা এখন থাক ৷ সমস্ত ফ্যাসিবাদী ও আধা-ফ্যাসিবাদী শাসক এমনটাই করে থাকে I মানুষকে মুগ্ধ করে রাখে ৷ জাতীয়তাবাদী আরক খাইয়ে রাখে ৷ তার ভণ্ডামির আর শেষ নেই । প্রধানমন্ত্রী জাতির প্রতি বড় বড় ভাষণ রাখেন ৷ আহা রে, সাধারণ মানুষের গরিব মানুষের জন্য কী বার্তাই না পাঠালেন ---আমি ক্ষমাপ্রার্থী । এটা একজন রাষ্ট্রপ্রধানের বার্তা ! আর আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় গােলচক্কর আঁকেন ৷ এসবে আমিও গলে গেছিলাম ৷ তারপর তাঁর মোটিভটা বুঝতে পেরে আর এসব ভাল্লাগেনি ৷ করোনায় মারা গেলেও ডেথ সার্টিফিকেটে অন্য কথা লেখা হচ্ছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা, সব চেপে যাওয়া হচ্ছে I চেপে যাওয়া হচ্ছে আমরা যে স্টেজ থ্রি-তে ঢুকে পড়েছি, কমিউনিটি স্প্রেড বাড়ছে, তাঁর কি উচিত ছিল না, এই সত্যিকারের জাতীয় (প্রকৃতপক্ষে আন্তর্জাতিক) দুর্যোগে আরও দায়িত্বশীল হওয়া ?মানুষকে সত্যিকারের চিত্রটা জানানো ? মানুষকে আরো আরো সাবধান করা সতর্ক করা সচেতন করা ? এই লকডাউন ঘরে বসে মজা করা, বোর হওয়া বা ল্যাদ খাওয়ার নয় । আমার পরিবারের পরিজনের কথা ভেবেই আমাকে বারবার হাত ধুতে হবে, হাঁচি পেলে কনুই দিয়ে নাক ঢাকতে হবে ইত্যাদি আরো সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে । রাস্তায় যে থুতু ফেলা মানা, সেটা এই দেশে ক’জন মানছেন ? গুটখা খাওয়া কি লকডাউন হলো ? নাঃ, হয়নি তো । মুখ্যমন্ত্রী বিড়ি শিল্পকে লকডাউনের আওতায় আনলেন না ।এই সিদ্ধান্ত দুষ্টু দামাল বাচ্চা ছেলেদের জন্য নয় তো ?

এই লেখার জন্য আমাকে হয়তো গ্রেপতার হতে হবে । হয়তো অন্যভাবে আক্রান্তও হতে পারি । হে রাষ্ট্র হে শাসক, আমার হিসেব আমার বন্ধুরা নেবে ।

আর যারা করোনায় প্রাণ হারাচ্ছে, তার হিসেব নেব আমরা ।

 

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...