logo corona

শিবির ।। অলক জানা

 

সময়টা খুবজোর মচকে দিচ্ছে। এখনো ভাঙতে পারেনি। তাহলে হয়ত টুকরো টুকরো ছড়িয়ে পড়াটই সুনিশ্চিত ছিল। তবে হ্যাঁ কতদিন এই আহত অবস্থা নিয়ে থাকতে পারা যাবে সেটাই এখন দাঁড়িয়ে, বড় একটা প্রশ্নচিহ্নের মুখোমুখি।
আশা ভরসার শেষ অন্তরীপটুকু এখনো জেগে আছে অনির্বাণ। সবকিছুই আবার আগের মতো তালে তাল ঠুকে সামলে উঠবে। কোন ভিখারি এখন আর বাড়িতে আসেনা। আসা বারণ। কিভাবে এই বন্দীদশায় উনুনে হাঁড়ি চড়াচ্ছে ? তারা কেমন আছে ? তারা কী খাচ্ছে ? নাকি এই সভ্যতার সর্বাধিক রাজগণ্য বুদ্ধিজীবীর মতো সময়ের দাসত্ব করতে সং সেজে রাস্তায় নামে। সমস্ত অব্যবস্থা থেকে নীরব নির্বাসনে থাকাই শ্রেয় কর্ম বলে মনে করছে এই মুহূর্তে। তারপর একদিন পোশাকের রঙ পালটে বলে বসবে " আমরা আছি যুগে যুগে " তো আরো কতকিছু দেখা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সেই ধৈর্যের পরীক্ষার জন্য দেশ রাষ্ট্র সারা পৃথিবী এখন প্রস্তুতমগ্ন।

ভিখারি নিয়ে কথাগুলো নেহাত একটা উপমা টানতেই বলা। তাদের দরিদ্রতা নিয়ে বিদ্রূপ করার জন্য নয়। সেটাই যদি কেউ বুঝে থাকেন তার জন্য ক্ষমাঘেন্না করে দেবেন ! আসলে কে যে কখন কার মুখে ঝাল খায় বোঝা যায়না। কিংবা কার যে শেকড় কতদূর বিস্তৃত আপাত দৃষ্টিতে ধরাও যায় না। ভোটব্যাঙ্ক রক্ষার্থে কর্মী সভায় যা কিছু বলা হয় তা পুরানের নিয়মেই অনুশীলন। সেখানে কোন ভুলচুকের জায়গা নেই। দীর্ঘ অধ্যবসায়ের ফল। সাধারণ জনতা তার বিন্দু বিসর্গ অনুমানও করতে পারবে না। কিভাবে একটি রাজনৈতিক গ্যাঁড়াকল তাদের ব্যবহার করে। আখ মেড়ে সুস্বাদু রস বের করে নেয়। চারিদিকে বিজ্ঞাপনের চিতানো বুকের আড়ালে ঢেকে যাচ্ছে নিম্ন -মধ্যবিত্তের দৈন্যদহন। কী অবস্থা হলো দেশটার। না না ছোটোমুখে বড়ো কথা ! না না ছিঃ ছিঃ "সে যে আমার জন্মভূমি "

চোখ খুললেই বিবিধ শিবির। এ বলে আমাকে দ্যাখ, সে বলে আমাকে দ্যাখ। এখন সর্বত্রই নাচমহল। কে কাকে দেখে, না এড়িয়ে পাশকাটিয়ে চলে যাচ্ছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। কারণ উদোম মুখোরোচক নৃত্যে জনতাসাধারণ একেবারে কাহিল। উপোস অনটন নিরাপত্তাহীতায় প্রায় অর্ধমৃত। কাজেই তাদের কাছে "পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি " কেবল একচেটিয়া রাজনীতির শিবির নয়। সাহিত্য সংস্কৃতির পরিমণ্ডলও সর্বাধিক
সংক্রামিত ভাইরাসের শিবির বিন্যাসে অনবদ্য। যে যেমন পারছে নিজেদের বেসুরো ঢাক বাজাতেই ব্যস্ত। স্তাবক বাদকদের আদৌ জানা আছে কী এ বাজনা মৃতদেহ সৎকারের জন্যও প্রযোজ্য নয়। তবে ফলাফল কী দাঁড়ালো কিছু সত্যিকারের নির্জন তপস্যার ফসল এইসব তুর্কী হাঙ্গামার জেরে চিরতরে থাকল মুহ্যমান অপ্রকাশিত। সত্যিই, কষ্ট হয়। কষ্ট পাই। যখন দেখি মুখে দিলে পাছায় হিক্কা অখাদ্য চড়া দামে বিকোচ্ছে তখন দু কথা না বলে পারি না। আসলে রঙ বর্ণ শব্দের সঙ্গে তো খুব একটা কম সময় কাটেনি। তাকে নিয়ে ছ্যাঁচড়ামি দেখলেই আমার অভুক্ত ঠোঁটও কিছু বলার জন্য গর্জে ওঠে।

একটা জরুরি অবস্থায় বোঝা যায় আমার আপনার পালিত আত্মীয়তার সীমারেখা। পরিস্থিতি হাড়ে হাড়ে আগুন জ্বেলে বুঝিয়ে দেয় এতদিন কার সঙ্গে ভাগ করেছি সকাল কিংবা মহার্ঘ সন্ধ্যার স্তব গান। তবেই না বন্ধুত্ব তবেই না এই ডাকহাঁক উপস্থিতির সইসাবুদ। তা না যদি হবে তবে কেনই বা তার জন্য দিনরাত্রির সময় কুলোয় না। কেনই বা জীবনের বহু ত্যাগ তিতিক্ষা সাঙ্গ হয়ে গেছে। যদি অদৃষ্ট মেনে থাকি তার দায় কেউ কোন ভাবেই নিতে পারে না। তবুও পাশে থাকার আশ্বাসটুকু এই মৃত্যুপুরীতে নতুন করে প্রাণের ঢেউ আনতেও পারে। যদি সেই বিপর্যয় চৌকাঠে এসে গলা উঁচিয়ে ডাক পাড়ে তবুও পারস্পরিক ধরে থাকা হাতের উষ্ণতায় আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট বইকি। আমার কোন শিবির নেই। আমার কোন রঙ নেই। আমার কোন ধর্ম নেই। আছে একটা বাউল বাউণ্ডুলে মন। যার সঙ্গে ঘুরে বেড়াই। অসহায় আর্ত মানুষের কাছে। যারা আমার মতো আকাশ মাটির মধ্যেকার বিভাজনহীন উদারতায় ভিজতে চায়। বাঁচতে চায় বড়োবেশি আত্মসম্মানের দীর্ঘশ্বাসে।

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...