ekksambhu

শম্ভু রক্ষিত এর এক গুচ্ছ কবিতা

শম্ভু রক্ষিত এর এক গুচ্ছ কবিতা

054026e1 7a25 4c30 8aab 926213073435

 নষ্টশোক

আমার অস্থির কাঁপা হাত দিয়ে যখন আমি তোমার হাড় মাংস তুস
পান করতে আসি, স্বর্ণখনি উসকে জাদুর তুলার রাজ্য নিতে আসি
অনুভূতির তখন যেন স্বার্থহীন যাত্রা

 

হোভার ক্রাফট, মনোরেল চড়ে যখন আমি তোমাকে গোপন ও গ্রাস করি
পুরাণকাহিনী, মেধমূর্তি, অগ্নিসংঘর্ষ আমাকে রোশনি অভ্যর্থনা করতে চায়
এবং অফুরন্ত সুযোগ নিয়ে যখন আমি আকাশে বৃহৎ বেলুনের নকশা আঁকি
আমার দূরবিনে ভিন্ন দুই নেবুলামণ্ডল কাঁপে
হরেকরকম জগৎ কে যেন বয়ে আনে

 

আমি জানি সবই জানি নাটক সঙ্গীত গুটিপোকা কখনো সুতোহীন
আমি প্রথম উঁচু হয়ে নীচে দৌড়ে যাই, আমি তোমার অস্তিত্ব চেপে ধরি

 

আমি বাতাস ধরে ঘূর্ণির ধারে তোমাকে প্রথম ঝুঁকে দেখি

 

আমি আণ্ডারগ্রাউণ্ড বা পুতুলের মিউজিয়ামে যখন খকখক করে উঠি
আমি স্থলের সম্রাট, ভূ-আলোড়নের চাপে পড়ে অস্ত্র-উৎপাদক আমাকে উঠিয়ে নাও–

 

বর্ণনিরূপক যন্ত্র আমাকে গ্রাহ্যই করে না
ধোঁয়া ধুলো কুণ্ডলী হয়ে ঘুরে সরু হয়ে নেমে আসে
পৃথিবী আমার মতো প্রতিষ্ঠিত কুৎসিত হয়ে যায়

 

 

লোকশ্রুতি

আমাদের বিশেষ এক আকাঙ্ক্ষা হৃদয়ের ওপর এসে অনূদিত হয়
প্রাগৈতিহাসিক মৃত্তিকার ত্যাগের মধ্যে আমাদের সমস্ত স্বর
শিল্পে ব্যর্থ ও কুৎসিত ক্ষুধা, মানুষের সম্মুখে
প্রহরের আলো, তাও নেই।
একথা এতোদিন পরে আবার আঁধারেরা বলাবলি করে যায়
তারা বিচরণ করে না।
কল্পনা করে?
পরিশ্রান্ত পাথরের বিচরণরত ত্যাগের ধূয়া দ্যাখে তারা
মানুষের আত্মত্যাগের কঙ্কাল আনাড়িরা ওড়ায় না।
ডিম্বাণুরা বোধ করে না বিক্ষত প্রহরীদের
তাদের সমহৃদয়ে পৃথিবীর কোনো দেশের পরিভাষাই নেই।

 

প্রবীণেরা অনেকেই আজ
হত্যারকদের বিবর্তনের ব্যজনে পিপীলিকার কঙ্কাল
দ্যাখে না যারা এই তন্ময় আকাশ
ধারণাও নেই যাদের সমগ্র যন্ত্রণা
নির্বহ ব্যস্ততা–ঐ বাতাসের মাথায় ভাসে।
তারা জানে সভ্য প্রহরীদের মুখে আত্মনাশের যান্ত্রিক বার্তা
মানুষের পরিকল্পনায় চিন্তার শ্রম ধরে
বিভীষিকা দ্যাখে অনেক ব্যক্তিকৃত বোধি
তা নিগ্রহের দিকে চেয়ে গুনগুন করে। আঁকড়ে ধরে মুহ্যমান ফেনা
সকল নিবৃত্ত বিবরণও মুক্ত করে দিয়েছে তারা ব্যগ্র মানুষের ধর্মে
জমাটবাঁধা বিভ্রম নিয়ে জগতের পথ–যে পথে সবাই আশ্চর্য স্থির
এখন তাই অনাকাঙ্ক্ষিত উৎসে নিয়োজকের অনুমান, ছবি রুপালি দুঃখ
পৃথিবীর মানচিত্র নিয়ে মাছেদের অবসন্ন ভ্রূণ যেন সব

 

 

রাজনীতি

আমি তুষারের পুরু চাদরে ঢাকা এই বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডের মধ্যেই শুয়ে পড়তে পারি
আমি বসাতে পারি বর্জ্য পদার্থ প্রক্রিয়ণকারী একটি কারখানা
নির্মাণ করতে পারি একটি চক্ষু চিকিৎসার গবেষণা কেন্দ্র
ও তার কম্পিউটার, লেসার, আল্ট্রাসাউন্ড ক্রায়োজেনিক কৃৎকৌশলও সম্পূর্ণ আয়ত্ত করতে পারি
আমি একটি চাকাওয়ালা শালভঞ্জিকা বা আমার স্বপ্নের শুশ্রূষা
অপরিণামদর্শী হতে বা বলতে পারি
আমি সব সমবায়ের কৃষক ও সমস্ত ছোট ফায়লাদের
দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারি
আমি হেলথ ট্রেনে চড়ে আনতে পারি স্তূপাকৃতি ধাতুর আকরিক
সাভিয়ার ট্রান্সফিগারেশন মঠ এলহাদজার ইস্পাত কারখানাও

 

রাজনীতি! ‘আমি’ হেলওয়ানে এইমাত্র উধাও হয়েছে
আর ‘পারি’কে ইস্পাহানের মহালোকে
অধ্যাপক সৃভিয়াতোসাঙ ফিও দোরভ পাঠিয়ে দিয়েছেন
অধ্যাপক ফিও দোরভের উক্তিটি: ‘আপনার প্রকৃত
বিকাশের ও রাজনীতির অভিব্যক্তির অনেক দেরি আছে’
শেষে বলতেই হচ্ছে

 

 

জিদ
 
 ভূস্তরের কড়ি--অঞ্চলগুলিকে আমি জিঞ্জির করে চলি
সংশয় : স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ফিনকি দিয়ে আমার বাষ্প বের করে
আমার উদ্ভুত শিশু সওদাগরি ছকে ধনুর্ধর গোলক মোড়ে
আমার কর্মক্ষমতা কৃশ রাখার চেষ্টা করে
 
 
আমি স্বধর্মে অধিষ্ঠিত মুনিব‚ পুরু করে মোমে মাজা
আমি স্টেট ট্রেডিং কর্পোরেশন‚ বড় বড় পাথরের চাঙ্গড়ের আয়তনের
 
আমি নুড়ি পাথরের জলদস্যু‚ কোষাগারের চাওয়াচাওয়ি নিয়ে পড়ি
আমি ডানাওয়ালা ভাট‚ প্রগতি ও দুশমনটুপি পরি
 
আমি ধোঁয়ায় তৈরী নীলচে--সবুজ রঙের লম্বা থাম
রকেট পরিচালনার জন্য যে সমস্ত যন্ত্রপাতির প্রয়োজন
তার প্রায় সবগুলিই নিন্দিত করি
 
আমি হাড়কঞ্জুস একটা‚ মজুরশ্রেণির লোক
আমি যতি-স্ত্রী ভাজা ভাজা ধরণের; কপিঞ্জলের মতো তার মাথা
 
তার চোখের ভ্রূযুগল গুটান আর কবিলা‚ ঘন
 
আমি সান্তর ঘৃণার বস্তু ; দেড় টনের মতো ; শিঙের তৈরি ছাতা থেকে 
গড়া শুরু করে করি হলোওয়ার কাচ
আমি অন্ধকারের পোড়া শহীদ। নিজস্ব ধরণের বীরপুরুষ
আমি মৎস্যশিকারের বর্ণনা ; উঁচু থেকে নীচু পর্যন্ত ফাটা
গণিতশাস্ত্রী‚ আবিষ্কর্তা‚ রাজনীতিজ্ঞদের চতুষ্পার্শ ধরি
 
আমি কপালিয়া; এশো রিসার্চ কোম্পানির আব্দারে আসি
আমি আমার শরীরের তরুণাস্থি‚ অন্য ইস্পাতধর্ম শরীরে স্থাপন করি
আমার বায়ুর চেয়ে ভারী অত্যুচ্চ বেগমান বিমানের এক নকশা হাতে
করে ধরে মাপজোখ টানি
আমি পাঁচ ছয় ফুট উঁচু লম্বা হয়ে যাই
 
 
 

 আমার শূন্য করপুট

জগতের সানুদেশে তোমার রোরুদ্যমান কণ্ঠ, স্বপ্নদহন মৃত্যুর কাছে
অধোঘুমের শস্য ছড়াচ্ছে, হতাশার ছাল পরে কে যেন কান্নার জল
ফেলল আমার পায়ে, প্রজ্বলন ও রঙিন মৃত্তিকার গন্ধভরা এক সন্ধিক্ষণে
এই গিরিচূড়া ও এই তৃষিত কালো পর্বত জ্বলনের সুগন্ধ আত্মার মতো বিষণ্ণ হয়ে
ওঠে। নিষিদ্ধ পতঙ্গের ওপর চেতনার ত্রিকোণ-ডানা ভাসে; তাদের আকম্প
বাহু জোনাকিরা দখল করে আছে; তাদের কণ্ঠ উঁচু হয়ে আছে বিবিপরীর
মেঘের হালুইয়ের মধ্যে; তাদের খোদিত মসৃণ সব অপরূপ দেহ
শস্যের সুবাসভরা ভাস্কর্যের মেঘের অনুকরণে–
একদিন মেঘনার জলের পায়ে তোমার অভিজ্ঞতার কল্পনার বস্ত্রের উপর
অক্ষর বসালুম। বর্ণালি মাকড় উর্বীর বিঘ্ন ফল দিয়েছিল; অভ্রভেদী
আর্তনাদ করে সন্ত্রস্ত জ্যোৎস্না; আমার শূন্য করপুট অনুভবের
উন্মাদনার ঝড়ে–সনির্বন্ধ প্রেরণার আদিগন্ত চিৎকারে তারা তাদের
সব আকাঙ্ক্ষা ও শপথ নিয়ে আতঙ্কের দ্বারে দ্বারে দ্রগড়
বাজিয়ে উঠবে
কাঁকসার ঢেউয়ের মতো প্রান্তর। তীক্ষ্ণ শ্যালট সৌধশীর্ষে যুদ্ধচক্র ছড়াচ্ছে
ক্রমাগত আমার শরীরে আর ভূমিতে জলের ধারাপ্রপাতের মতো শব্দ
করে মিলনের তন্বঙ্গী জলপাত্র, তোমার নির্দেশের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে
তোমার সর্বকারুকার্যের তরঙ্গগুলি সূর্যের পা বেয়ে বেয়ে ওঠে।

 

পৌত্তলিক

এক ধূসর ধাতুর দুর্গের মধ্যে হাত ও পাগড়িধারী
মাহুত আকৃতির পাথর পেয়ে যাই।
আর এবারই প্রথম শুনতে পাই
নদীর জলে চামু কর্মকারের হাতে খুন হওয়া
মোহান্তজির পোষা হরিণের গোঙানির সুর।

 

আমাকে পাঁচ পরগনিয়ায় ভাষায় যুক্তি দেন যে পর্তুগিজ
তিনি ধনী গাড়ি বাড়ি সম্পত্তি-ওলা ক্রীতদাসদের দেশ থেকে মাঝে মধ্যে
মুরীর অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরির চিমনিগুলোর মতন হয়ে ওঠেন।

 

তিনি সারাদিনমান নিয়ে আমার মতো চিন্তিত নন
আমার খুঁটিতে বাঁধা আকাশের দিকে চেয়েও তিনি দেখেন না।
তিনি নদীর মাছ আর হিন্দু ত্রিতত্ত্ববাদের ওপর নির্ভরশীল
কেননা তিনি কালো বস্ত্রধারী পীর, কখনো বা পুরোহিত, মোহান্ত, যাদব
চুপিসাড়ে আমি তাঁর পায়ের ছাপ থেকে
জলমগ্ন খেতের আল বের করি।

 

লোকে বলে, আমার ময়লা ছিন্নবস্ত্রে আটত্রিশটা গিঁট
এক ফুটো জলপাত্র দেখে
আমি মেদিনী পিস্কার যাওয়ার গাড়ি ছাড়ি।
এ পাহাড়ের অতি প্রাচীন এক লোকালয়ে ঝুলে আছে
আমার যুক্তিদাতা পর্তুগিজের কাঠের বাড়ি।
তিনি একাধারে সুদর্শন ও অমায়িক
তাঁর বাড়ির চারিদিকে নানা সুগন্ধি রঙিন বুনো ফুলের গন্ধ
সামনে জঙ্গল, দূরে ছোট ছোট পাহাড়
আমার প্রায়ান্ধ চোখের হিম সেখানে পৌঁছয় না
তবে এক চোরা জঙ্গল উত্তাল সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে এখানে পৌঁছেছে।

 

আমি রানিচাপের মানুষ। খয়ের চিকরাশি
সোহা চিতার হাওয়ার ওপর ভিত্তি করে
একটিমাত্র বিশাল পাথর দিয়ে কুটির বানিয়েছি।
আমার পাহাড়ে শস্য নেই, জুমচাষ নেই
মাঘী মাহালির ন্যায় নাচনি নেই
আমি অভ্যন্তরীণ গৃহ কলহের জন্যে বছর কয়েক
মালগুজারি দিতে পারিনি।

 

এবার বোঝাই যাচ্ছে
আমার কুটীর অনেকটা উপরে উঠে এসেছে
এবারই তাই প্রথম আমি নৈঃস্বর্গের ঘোড়ার ঘাড় ধরেছি
এবার আমার দুপাশে ছোট ছোট ঢিপির মতো
অনেক পাহাড় লালচে মাটি

 

এবার আমাকে ভাবলাম: আকাশের ছায়া, যৌতুক আর তত্ত্ব

 

যুক্তিদাতা পর্তুগিজকে দেবতাজ্ঞানে আমার পুজো করাটাকে
কেউ হাস্যকর মনে করে নাকি?

 

লেজিসলেটিভ রেফারেন্স সার্ভিস

আর কয়েকটি নিঃশব্দ মুখের
বুকমোবাইলস খসে পড়ছে।
ফোর এইচ ক্লাবগুলি
প্রস্তরীভূত কঙ্কালে পরিণত হয়েছে।
    ঠিক তাই।
চেল্লানি, হাততালি, সিটি
মিছিল বস্তাবাঁধা কোম্পানিদের সঙ্গে।
আশেপাশের বাতাস ঠাট্টা করে দ্যাখে
ল্যাবরেটরির পিরিয়ড, ক্লোজডশেলফ।
ঠিক তাই।
ফ্যাক্টরি, কারাগার, কোর্ট
কয়েকটি জীবন্তবৎ জীবজন্তু
বিতর্কের ঝড় তুলছে
প্রত্যক্ষ আকর্ষণ থেকে
ছিটকে বেরিয়ে গিয়ে পড়ছে,
প্রাদেশিকতাদুষ্ট প্রকৃতিবাদ আমন্ত্রণ পেয়েছে
নিঃসঙ্গ বনরক্ষীর মনোভাবটি পাঠ করবার।
ঠিক তাই।
বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টি বিবর্ধিত দেখা যাচ্ছে
অঙ্ককষা সংখ্যা নিয়ে মাথা ঘামানো চুলগুলো
গাঢ় রঙে পালিশ করছে
এবং উদ্দেশ্য ঠিক করছে।
ঠিক তাই।
দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্যবীমা, ব্যবসাসংক্রান্ত অঙ্কশাস্ত্র
আইন ইংরেজি এবং অর্থনৈতিক ভূগোল
টুকরো সমস্যাগুলির বিভিন্ন দিক বুঝতে সাহায্য করছে
ঠিক তাই।
রঙ্গিনচিত্র, ভাস্কর্য, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট
মণ্ডনশিল্প, প্রাকৃতিক ইতিহাস স্বভাবতই ধৈর্য ধরে!

 

 

কেবল শব্দের, কেবল ভাষার

আমি রক্তমাখা হাসি ও সূক্ষ্মতা নিয়ে অধীর ও উন্মাদ চিৎকার করে
আবার মিন্দানাও দ্বীপের কাছে ফিরে যাব।
এখন আমার শরীরে কোনো মহাবীর গাজী ও সমান পাশা নেই
বিধর্মী ইহুদী ও খ্রিস্টিয়ানগণ নেই
এখন অবারিত মাঠ ধু ধু প্রান্তর। কোথাও শ্রান্ত শীতল বৃক্ষতল নেই
পায়ের তলায় ম্যাসিডোনিয়ার পাথর, সম্মুখে কোনো সুগভীর
সরোবর নজরে আসে না।

 

আমার মাথার উপর কোনো ক্ষয়গ্রস্ত মনুমেন্ট নেই।
সামনে কোনো আত্মধর্ম ও সমাজ ও হিন্দু মোসলমানদের বাগান নেই
এখন সমুদ্রের মতো দিশাহীন সীমাহীন কোনো
বিল পুকুর মনে করতেই পারি না আমি।

 

আগুন ও নদীর সামনাসামনি দাঁড়িয়েও আমি এখন কিছু দেখি না।
অন্ধকার। অথচ সেই অন্ধকার নীল অন্ধকারের মধ্যে
রূপালি বিদ্যুৎ রেখা–
আদি নেই, অন্ত নেই, চতুর্দিকে অন্তহীন জটিলতা
অপার সমুদ্রের মতন কি–জানা নেই।

 

এখানে আনন্দ নেই।
নিখাদ অন্ধকার
আলোর ক্ষীণতম আভাসও নেই
ফিরে যাব।

 

আমি নদীর শরীরে রুপালি আলোর খেলা দেখব
এবং ঝকঝকে রঙিন সোনালি মাছ।

 

সম্মুখে এক অজানা রহস্য আমাকে হাতছানি দেয়
চিহ্নিত সংবাদ দেয়
প্রখর উত্তাপে আমার সর্বাঙ্গ পুড়ে যায়
মুখ দিয়ে গলগল করে উপছে রক্ত ওঠে আমার।

 

আমার রক্তের রুমালে পীর মোর্শেদের দূষিত রক্ত
গোর পূজক পীরপূজক দুর্গাপূজক দলের বিরুদ্ধে
চিৎকার করে ওঠে।

 

আমার মুখ সূর্যমুখী চারা, মোচার খোলা হয়
নিষ্ফল শূন্যে ব্যর্থ হাহাকারে মাথাকুটে
আবার চারিদিক প্রতিধ্বনিত হয়।
ছায়া আর রহস্যের দীর্ঘ জটিলতার মধ্যে
আমার পথ বৃত্ত হয়ে ঘুরে যায়
ধ্বংস করে আমার সম্মুখের মঞ্চ
অশুভ চিহ্ন
রক্ত অস্থি
এবং আগুনের রূপান্তর শুরু হয়।

 

আমার চামড়ার মধ্যে খেলা করতে থাকে হাওয়া
আমার প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু বিকীর্ণ কান্নায় স্পষ্ট হয়।

 

আমি ভাবি,
কত দুঃখ আছে পৃথিবীতে
কত যন্ত্রণা
দীর্ঘশ্বাস
প্রবল আক্রোশ
আমি ইন্দ্রিয়ের কোনো করতালি শুনতে পাই না
কেবল শব্দের
কেবল ভাষার
ভাষাহীনতায় রিক্ত চতুর্দিক।

 

কেবল শব্দের
কেবল ভাষার জন্য
সব চিহ্ন অর্থহীন নিরন্তর দুয়ার।
বন্য বরাহের মতো ঈশ্বরের পৃথিবীতে
কোনো লাভ
কোনো দম্ভ নেই আমার।

 

আমি রক্তমাখা হাসি ও সূক্ষ্মতা নিয়ে
অস্পষ্ট চিৎকার করে
এবার একাকী পথে এসে
সৃষ্টির বিধি বিধান সৃষ্টি করে ফিরে যাব
এবং আমি ঘৃণা ভালোবাসা প্রেম সুন্দরের জন্য
যুদ্ধ অভাব প্রভৃতির জন্য
দীর্ঘ সবুজ হব।

 

আহত উদ্ধত প্রিয় হিন্দু ব্রাহ্ম খ্রিস্টিয়ান নাস্তিক
ও বৈষ্ণবদের অগণিত মুখ
মুখের মিছিল নিয়ে ফিরে যাব আমি
কেবল শব্দের
কেবল ভাষার।

 

একক কবিতা সন্ধ্যা



সহজ কবিতা সহজ নয় কঠিনও নয়



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...