দালাল ।। দেবব্রত রায়

onugolper adda full

 

একেতো খরার বাজার তার উপর  রবিবার !   এমনিতেই মনটা  খিঁচড়ে ছিল শিবনাথের আর, তার মধ্যেই দোকানের কর্মচারী ছোটকু দোকান-ঘরটা পরিস্কার করার জন্য একটু তাড়া লাগাতেই , শিবনাথ একটা কাঁচা খিস্তি দিয়ে উঠলো! হাঁটুরবয়সী হলে কী হবে, ছোটকুও ছেড়ে দেবার পাত্র নয়! দু-জনের ভীষণ বিতণ্ডার মধ্যেই শিবনাথের বুজুমফ্রেন্ড রঞ্জন ওর নতুন কেনা  গাড়িটা নিয়ে এসে হাজির !  একটা ছেড়া কাপড়ের টুকরো-ই  হাত মুছতে মুছতে শিবনাথ হাসিমুখে দোকানের দরজায় এসে দাঁড়ালো। জিজ্ঞেস করলো, " কী ব্যাপার রে, অ্যাতদিন কোথায় ছিলি ! "
রঞ্জন বললো, " সেসব কথা পরে হবে,  এখন চলদিকি, খুব জরুরি একটা কাজ আছে! "
নিজের ব্যবসার পাশাপাশি শিবনাথ জমিজমার দালালিও করে রঞ্জনের সঙ্গে ! কিন্তু, টাকা জমানোর স্পঞ্জিফার্মগুলো রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকেই  ওদের এই ব্যবসাটাতেও একেবারে ভাটা চলছে! তাই, রঞ্জন 'কাজ আছে !' বলতেই, শিবনাথ খুশিখুশি মনে জিজ্ঞেস করলো, ' খদ্দের !'
রঞ্জন বললো, 'উঁহু, চল যেতে যেতে বলবো ! '
শিবনাথ ছোটকুকে দোকানঘরটা পরিস্কারের কাজকর্ম বুঝিয়ে দিয়ে রঞ্জনের গাড়িতে চেপে বসলো। 
প্রায় ঘন্টাখানেক পর রঞ্জন ওকে নিয়ে একটা অপরিচিত বাড়ির মধ্যে এসে ঢুকলো। শিবনাথ দেখলো, রঞ্জনের এখানে বেশ খাতির আছে ! বারান্দায় বসে থাকা ভিড়টাকে পাশ কাটিয়ে রঞ্জন ওকে নিয়ে একেবারে বাড়িটার ভিতরে ঢুকে গেল! ঘরের ভিতর সাদা ধবধবে বিছানায় বসে থাকা মানুষটাকে রঞ্জন ঢুকেই বললো, ' শাস্ত্রীজী, আমার বন্ধু !  এর হাত দেখার কথাই আপনাকে বলেছিলাম ! '
শিবনাথ রঞ্জনের কথা শুনে একেবারে আপ্লুত হয়ে উঠলো। মনে মনে ভাবল, বন্ধুভাগ্য বটে ওর! রঞ্জনটা এত ভাবে ওর জন্য ! 
রঞ্জনের দেখাদেখি শিবনাথও শাস্ত্রীজীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে হাতটা এগিয়ে দিল তাঁর দিকে ।              
প্রায় পনেরো মিনিট ধরে শিবনাথের হস্তরেখা বিচারের পর শাস্ত্রীজী সহাস্যমুখে বললেন, ' তিনটে স্টোন ধারণ করলেই, মাত্র তিন মাসের মধ্যে ওর ভাগ্যের চাকা আমূল ঘুরে যাবে ! '
     নিজের ভাগ্যের বিষয়ে খুটিনাটি সবকিছু জেনে শিবনাথ ভীষণ খুশিখুশি মনে বাইরে বেরিয়ে এসেই একটা সিগারেট ধরালো। রঞ্জন তখনও ভিতরে।  সিগারেটটা টানতে টানতে শাস্ত্রীজীর রুমের বন্ধ জানলাটার নীচে একটু ছায়া ঘেঁষে এসে দাঁড়াতেই, শিবনাথ স্পষ্ট শুনতে পেল রঞ্জন শাস্ত্রীজীকে  বলছে, " তিনটে স্টোনের দাম প্রায় ত্রিশ হাজার!  তাহলে, আমার কমিশন  কত হলো?"
 শাস্ত্রীজী রঞ্জনকে বললো," মন্দ নয়, স্টোন পিছু থার্টি ফাইভ পার্সেন্ট! "
 
 
 
 

একক কবিতা সন্ধ্যা



মহুল ওয়েব প্রকাশিত বিভিন্ন সংখ্যা



করোনা Diary



আমাদের কথা

আমাদের শরীরে লেপটে আছে আদিগন্ত কবিতা কলঙ্ক । অনেকটা প্রেমের মতো । কাঁপতে কাঁপতে একদিন সে প্রেরণা হয়ে যায়। রহস্যময় আমাদের অক্ষর ঐতিহ্য। নির্মাণেই তার মুক্তি। আত্মার স্বাদ...

কিছুই তো নয় ওহে, মাঝে মাঝে লালমাটি...মাঝে মাঝে নিয়নের আলো স্তম্ভিত করে রাখে আখরের আয়োজনগুলি । এদের যেকোনও নামে ডাকা যেতে পারে । আজ না হয় ডাকলে মহুল...মহুল...

ছাপা আর ওয়েবের মাঝে ক্লিক বসে আছে। আঙুলে ছোঁয়াও তুমি কবিতার ঘ্রাণ...